Thursday, May 12, 2016

কিডনি নস্ট হবার লক্ষণগুলো কী কী

কিডনি নস্ট হবার লক্ষণগুলো কী কী

 কিডনির প্রাথমিক রোগে বা অন্য কোনো কারণে কিডনি আক্রান্ত হয়ে ধীরে ধীরে মাসের পর মাস বা বছরের পর বছর ধরে যদি দুটো কিডনিরই কার্যকারিতা নষ্ট হতে থাকে তখন তাকে ক্রনিক বা ধীরগতিতে কিডনি ফেইলুর (Kidney Failure) বলা হয়। একটি কিডনি সম্পূর্ণ সুস্থ থাকলে এবং অপরটির কার্যকারিতা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেলেও সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করা সম্ভব। দুটো কিডনিরই শতকরা ৫০ ভাগ বিনষ্ট হলেও শরীর সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকে, যার ফলে একজন সুস্থ মানুষ (কিডনি ডোনার – Kidney Donor) তার নিকট আত্মীয় বা অন্য আর একজন কিডনি বিকল রোগীকে (কিডনি গ্রহণকারী) একটি কিডনি দান করেও সুস্থ থাকেন, স্বাভাবিক জীবনযাপন করেন। কেবল দুটো কিডনির ৫০ ভাগের উপর নষ্ট হলেই কিডনি বিকল হওয়ার প্রবণতা শুরু হয় এবং ৭৫ ভাগ নষ্ট হলেই শরীরের লক্ষণগুলো ধরা যেতে পারে আর ৯৫ ভাগের উপর নষ্ট হলে কৃত্রিম উপায়ে (ডায়ালাইসিস বা কিডনি সংযোজন) ছাড়া রোগীকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হয় না, যাকে বলে এন্ড স্টেজ রেলাল ফেইল্যুর (End Stage Renal Failure)।
                                

কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণ

১. গ্লোমেরুলো নেফ্রাইটিস বা কিডনির ছাকনি প্রদাহ রোগ ৫০-৫৫%।
২. ডায়াবেটিসজনিত কিডনি রোগ ১৫-২০%।
৩. উচ্চ রক্তচাপজনিত কিডনি রোগ ১০-১৫%।
৪. কিডনি বা প্রস্রাবের রাস্তায় পাথর ও অন্য কোনো কারণে বাধাজনিত রোগ ৭-১৯%।
৫. কিডনি বা প্রস্রাবের রাস্তায় জীবাণুজনিত রোগ ৫-৭%।
৬. বংশানুক্রমিক কিডনি রোগ ৩-৫%।
৭. ওষুধজনিত কিডনি রোগ ৩-৫%।
৮. অন্যান্য ও অজানা।

কিডনি নস্ট হবার উপসর্গ

আগেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, দুটো কিডনির শতকরা পঁচাত্তর ভাগ কার্যকারিতা নষ্ট না হওয়া পর্যন্ত কিডনি বিকলের উপসর্গ দেখা যায় না। রোগী প্রাথমিক পর্যায়ে সামান্য ধরনের কিডনি রোগ থাকার দরুন গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারে না। শতকরা ৭৫ ভাগের উপর কিডনি অকেজো হয়ে গেলে রোগীর ক্ষুধা মন্দা, আহারে অনীহা, বমি বমি ভাগ, বমি হওয়া, শরীর ক্রমান্বয়ে ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া, শারীরিক দুর্বলতা প্রভৃতি উপসর্গ দেখা দেয়। এছাড়াও প্রস্রাবের পরিমাণের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়, রাতে প্রস্রাব করার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। কোনো রকম চর্মরোগের উপসর্গ ছাড়াই শরীর চুলকায়, যখন তখন হেচকি ওঠে এবং অনেক ক্ষেত্রে খিঁচুনি হতে পারে। রোগী শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেলে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট, তীব্র গতিতে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস, ঝিমানো ভাব, এমনকি এক পর্যায়ে রোগী জ্ঞানও হারিয়ে ফেলতে পারে।
রোগীকে পরীক্ষা করে রক্তের স্বল্পতা বোঝা যায়। অধিকাংশ রোগীর উচ্চরক্তচাপ (Hypertention) ধরা পড়ে। এছাড়া কোনো কোনো ক্ষেত্রে রোগীর কারণ সাপেক্ষে শরীরে পানি দেখা যেতে পারে। আবার অনেক ক্ষেত্রে চামড়া শুকিয়ে যেতে পারে। কিছু কিছু রোগীর হৃিপণ্ডের আবরণে পানি এবং হার্ট ফেইলুরের চিহ্ন দেখা যায়। অনেক ক্ষেত্রে শরীরের এমন কি হাত-পায়ের মাংসপেশী শুকিয়ে যায় যার দরুন রোগী সাধারণত চলাফেরার শক্তি হারিয়ে ফেলে।

কিডনি নস্ট রোগ নির্ণয়

ক্রনিক রেনাল ফেইলুর (Chronic Renal Failure) রোগ নির্ণয়ের জন্য রোগীর উপসর্গের ইতিহাস, শারীরিক পরীক্ষা ছাড়াও প্রাথমিকভাবে রক্তের ইউরিয়া (Serum Urea), ক্রিয়েটেনিন (Serum Creatinin) এবং ইলেকট্রোলাইট (Electrolyres)পরীক্ষা করা হয়। কিডনির কার্যকারিতা কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রক্তের ইউরিয়া, ক্রিয়েটেনিন বেড়ে যায়। পটাশিয়ামের পরিমাণ বাড়তে থাকে ও বাইকার্বোনেট কমে যায়। এছাড়াও ফসফেট শরীরে জমতে শুরু করে, যার ফলে ক্যালসিয়াম কমে যেতে বাধ্য হয় এবং অন্যান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও শুরু হতে থাকে। এরপরে কি কারণে ধীরগতিতে কিডনি বিকল হয়েছে তা বের করার জন্য প্রস্রাব পরীক্ষা করে এ্যালবুমিন (Albumin) আছে কিনা তা দেখা হয় এবং লোহিত ও শ্বেত কণিকা আছে কিনা তাও দেখে নেয়া হয়। প্রয়োজনের ২৪ ঘণ্টার প্রস্রাবের প্রোটিনের পরিমাণও দেখা হয়। প্রস্রাবে এ্যালবুমিন ২৪ ঘণ্টায় এক গ্রামের বেশি হলে প্রাথমিকভাবে কিডনি ফেইলুরের কারণ হিসেবে গ্লোমারুলোনেফ্রাইটিস ধরে নেয়া হয়।
কিডনির গঠন প্রণালী দেখার জন্য আলট্রাসনোগ্রাম এবং পেটের প্লেইন এক্স-রে করা হয়ে থাকে। কিডনির কার্যকারিতা শেষ পর্যায়ে গেলে দুটো কিডনির আকৃতি স্বাভাবিকের চেয়ে ছোট হয়ে যায়। যার কারণ গ্রোমারুলোনেফ্রাইটিস বা জীবাণুজনিত বলে মনে করা হয়। কিডনির আকৃতি ছোট না হয়ে যদি বড় হয়ে যায় এবং ভেতরের ক্যালিসেস বা শাখা-প্রশাখা নালীসমূহ ফুলে যায় তাহলে অবস্ট্রাকটিভ ইউরোপ্যাথিকে কিডনি বিকলের কারণ হিসেবে ধরা হয়। দুটো কিডনিতে যদি অনেকগুলো সিস্ট থাকে তাহলে বংশানুক্রমিক কিডনি রোগ বা পলিসিসটিক কিডনি ডিজিজ (Polycystic Kidney Disease) ভাবা হয়। এছাড়া পাথরজনিত কারণে বা প্রোস্টেটজনিত জটিলতায় কিডনি বিকল হলো কিনা তাও আলট্রাসনোগ্রাম ও এক্স-রের মাধ্যমে ধরা যেতে পারে।
উল্লিখিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াও কিডনি বিকল রোগীদের হেপাটাইটিস-বি ভাইরাস, সি-ভাইরাস, এইডস (AIDS) ভাইরাস আছে কিনা তাও দেখা প্রয়োজন। বুকের এক্স-রে, ইসিজি রক্তের হিমোগ্লোবিন, ব্লাড গ্রুপ, এইচএলএ টিস্যু এন্টিজেন এসব পরীক্ষাও বিশেষ ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয়।

কিডনি নস্ট হবার চিকিত্সা ও প্রতিকার

কিডনি অকেজো রোগীর চিকিত্সা নির্ভর করে কি কারণে এবং কত পরিমাণে কিডনির কার্যকারিতা নষ্ট হয়েছে তার উপর। কেননা এমন অনেক কারণ রয়েছে যেগুলোকে আমরা সঠিক চিকিত্সার মাধ্যমে ভালো করে দিতে পারি, যেমন বাধাজনিত কিডনি রোগ। আবার কিছু কারণ আছে ভালো করা না গেলেও কিডনি আরো বেশি অকেজো না হয়ে যায় তার ব্যবস্থা নিতে পারি, যেমন উচ্চরক্তচাপ। অবশ্য যে কোনো কারণেই হোক না কেন দুটো কিডনির শতকরা ৯৫ ভাগের উপরে যদি নষ্ট হয়ে যায় তখন কোনোভাবেই কিডনির কার্যকারিতা ফেরানো সম্ভব হয় না। আর এসব ক্ষেত্রেই প্রয়োজন পড়ে ডায়ালাইসিস বা কিডনি সংযোজনের মাধ্যমে চিকিত্সার ব্যবস্থা করা। উল্লেখিত দু ধরনের চিকিত্সাই অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও ঝুঁকিপূর্ণ। এজন্যই প্রয়োজন সঠিক সময়ে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় করে বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকের মাধ্যমে কিডনি রোগের চিকিত্সা করানো। এর জন্য প্রয়োজন কিডনি রোগ সম্পর্কে সমাজ সচেতনতা, প্রাথমিক জ্ঞান অর্জন করা ও চিকিত্সা সেবার মান বৃদ্ধি করা। কেননা প্রতি বছর আমাদের দেশে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার কিডনি রোগী কিডনি অকেজো হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। এদের বাঁচাবার জন্য চাই চিকিত্সার সুযোগ-সুবিধা।
শুধু সরকারি পর্যায়ে এ ধরনের সুযোগ-সুবিধা সম্ভব নয়। তাই এগিয়ে আসতে হবে বেসরকারি উদ্যোক্তাকে ও সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিবর্গকে। তৈরি করতে হবে অত্যাধুনিক ডায়ালাইসিস এবং কিডনি সংযোজনের ব্যবস্থা। আর কিডনি সংযোজনের জন্য নিকট আত্মীয়দের মধ্য থেকে ডোনার হিসেবে এগিয়ে আসতে হবে। কেননা দুটো সুস্থ কিডনির মধ্যে একটা নিকট অসুস্থ কিডনি রোগীকে দান করলেও স্বাভাবিক সুস্থ জীবন-যাপন করা যায় এবং সেক্ষেত্রে সামাজিক মর্যাদাও বৃদ্ধি পায়। তাহলেই হাজার হাজার কিডনি বিকল রোগীকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে।

থাইরয়েডের সমস্যায় করণীয় – Thyroid Problem in Bangla

থাইরয়েডের সমস্যায় করণীয় – Thyroid Problem in Bangla

 

থাইরয়েডের সমস্যায় করণীয় – Thyroid Problem in Bangla
 
থাইরয়েডের সমস্যা এখন স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। মেয়েদের ক্ষেত্রে এ রোগ বেশি দেখা দেয়। হাইপোথাইরয়েডিজমের (Hypothyroid) জন্য ওজন অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের কাজ সঠিক ভাবে পরিচালনা করতে প্রয়োজন যথাযথ পুষ্টি গ্রহণ, সেই সঙ্গে ওজন নিয়ন্ত্রণ করাও জরুরি। এ সমস্যায় যে খাবারগুলো সুস্থতা ফিরিয়ে আনতে কাজ করবে।
 
 
আয়োডিন যুক্ত খাবার গ্রহণ
যদিও আয়োডিন যুক্ত লবণের মাধ্যমে আমরা আয়োডিন গ্রহণ করে থাকি। তবে চিকিৎসকরা লবণ কম পরিমাণে খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কলা, গাজর, স্ট্রবেরি, দুধ ও সামুদ্রিক মাছ এবং দানা জাতীয় শস্য খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। শাকপাতা ও মৌসুমি সবজিতেও রয়েছে আয়োডিন। তাই ডায়েটিং এর নামে খাবার তালিকা থেকে এগুলো বাদ দিলে চলবে না।
 
প্রোটিন যুক্ত খাবার গ্রহণ
 
থাইরয়েড ম্যানেজমেন্টের জন্য প্রোটিন খুবই জরুরি। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে।। চিজ, পনির, ডিম, ফ্রেশ সি ফুড, মুরগির মাংস পরিমিত খেলে থাইরয়েড গ্ল্যান্ড ঠিক মত কাজ করতে পারবে।
 
জাঙ্কফুড থেকে দূরে থাকতে হবে
বার্গার, হটডগ, চিপস প্রভৃতি জাঙ্কফুড খাবার পরিহার করতে হবে।এ সব প্রসেসড খাবারের বাড়তি লবণ কোষের সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়। আর এগুলো শরীরে মেদ জমতে সহায়তা করে। তাই যথাসম্ভব এই খাবারগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। বাড়িতে তৈরি ওয়েল ব্যালেন্সড খাবার খেতে হবে।
 
থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে প্রপার ডায়েটের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিন নিয়ম করে ব্যায়াম করা জরুরি। ব্যায়ামের জন্য অভিজ্ঞ কোন ইন্সট্রাকটরের পরামর্শ নেয়া যেতে পারে। সাইক্লিং কিংবা সুইমিং থাইরয়েডের জন্য খুব উপকারী। যোগাসনও খুব কার্যকরী।
 
পরিমিত ঘুম
থাইরয়েড ভালোভাবে কাজ করার জন্য রাতে ভালো ঘুম হওয়া খুব প্রয়োজন। তাই রাতের ঘুমের সঙ্গে কোনো কম্প্রোমাইজ নয়। অনেকে রাতে জেগে থেকে দিনে ঘুমান। এটা ঠিক আছে যদি আপনার ঘুম পরিমিত হয়। তবে মনে রাখতে হবে রাতের ঘুম বেশি গাঢ় হয়। কারণ শব্দ ও আলোর উৎপাত রাতে কম থাকে।

মুখের Aphthous Ulcer চিকিত্সা ও প্রতিকার

মুখের Aphthous Ulcer চিকিত্সা ও প্রতিকার

 

মুখের Aphthous Ulcer চিকিত্সা ও প্রতিকার
শৈশবে ও বয়োসন্ধিতে অ্যাপথাস আলসার দেখা যায়। ছোট ছোট গোলাকৃতির মত যার কেন্দ্রে সাদা বা হলুদ ডট এবং চারপাশে লাল বর্ডার দেখা যায়। এক্ষেত্রে ব্যথা না হলেও ভালো হয়ে যাওয়ার ১ থেকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে পুনরায় দেখা দিতে পারে। এ ধরনের আলসারে ক্ষত সেরে যাবার পর কোন দাগ থাকে না।


গবেষণায় প্রতীয়মান হয়েছে এক তৃতীয়াংশ রোগীর কারণ বংশগত। ধূমপান, স্ট্রেস, অতিরিক্ত ঝাল বা মসলাদার খাদ্যগ্রহণ, আঘাত, ফুড এলার্জি অ্যাপথাস আলসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। খাদ্য তালিকায় আয়রণ, ভিটামিন বি, জিংক, আয়োডিন এর অভাবে এ রোগ হতে পারে। কখনও কখনও পার্নিসিয়াস এনিমিয়া pernicious anemia, ডার্মাটাইটিস হার্পেটিফর্নিস Dermatitis herpetiformis, এইডস, বেহসেট ডিজিজে অ্যাপথাস আলসার উপসর্গ হিসেবে দেখা যায়। কোন কোন টুথপেস্ট বা মাউথ ওয়াশে সোডিয়াম লোরিল সালফেট থাকে যা দীর্ঘদিন ব্যবহারে অ্যাপথাস আলসার দেখা দেয়।
যে সকল কারণে অ্যাপথাস আলসার Aphthous Ulcer হয় সে কারণগুলো এড়িয়ে চললে অ্যাপথাস আলসারকে কন্ট্রোলে আনা যায়। দিনে ২/৩ বার দাঁত ব্রাশ করা জরুরি। তাই নরম গোল মাথার ব্রাশ ব্যবহার করতে হবে। আলসার হলে অতিরিক্ত গরম, ঝাল বা শক্ত খাবার যেমন পটেটো চিপস, টোস্ট, বিস্কিট, গরম চা বা কফি না খাওয়াই ভালো। আয়রণ, জিংক ও ভিটামিন বি সমৃদ্ধ খাবার আহার করা উচিত। এরপরও ঘাটতি দেখা গেলে ভিটামিন বি১২ সাপ্লিমেন্ট খেতে হবে। সাধারণত চিকিত্সকগণ চিকিত্সার শুরুতে হাইড্রোকর্টিসোন বা ট্রাইঅ্যাসসিনোলন টপিকাল   দিয়ে শুরু করেন। টেট্রাসাইক্লিন বা ডক্সিসাইক্লিন পানিতে গুলিয়ে দিনে ৩/৪ বার মাউথ ওয়াশ হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
ক্লোরহেক্সিডিন মাউথ ওয়াশ ও ব্যথা উপশমে ভাল ফলদায়ক হয়ে থাকে। উপরোক্ত চিকিত্সাগুলো ব্যথা উপশম ও তাড়াতাড়ি ক্ষত সাড়ানোর জন্য ব্যবহূত হয়। এক্ষেত্রে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কোন চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে হবে।
চিকিত্সকরা রোগের উপসর্গ ও জটিলতার উপর ভিত্তি করে এসকল ওষুধ প্রেসক্রাইব করেন। কখন কখন স্কিন বায়োপসি (Skin Biopsy) করার প্রয়োজন হয়। তাই মুখে কোন ঘা দীর্ঘ স্থায়ী হলে অবহেলা না করে চিকিত্সকের পরামর্শ নেয়া জরুরি।

হেপাটাইটিস থেকে বাঁচুন

                                 হেপাটাইটিস থেকে বাঁচুন

 যকৃত তথা লিভার মানবদেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। মানুষের শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় লিভার অত:প্রত ভাবে জড়িত। আমরা প্রতিদিন যা খাই তা হজম হয়ে রক্তে প্রবেশের আগে লিভারের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সে হিসেবে লিভারের কাজ অনেকটা পোর্টের মত। যা কিছু শরীরে প্রবেশ করছে তার ভাল মন্দ বাছাই করে ভালটা রাখা এবং মন্দটাকে অপসারণ করার কাজটি সমপাদন করে লিভার। এছাড়াও, লিভার রক্তে বিভিন্ন ধরণের গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন সিনথেসিস তথা সংশ্লেষ করে। উক্ত প্রোটিনগুলোর মাধ্যমে রক্তে বিভিন্ন পদার্থ পরিবহন, রক্ত জমাট বাঁধা, রক্তের তারল্য বজায় রাখার দায়িত্ব লিভার বহন করে। ভিটামিন এ, ই ও বি-১২ এর মত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন সঞ্চয়ের কাজ করে লিভার। লিভার বিভিন্ন ওষুধকে ব্যবহার উপোযোগী করে ও বিষাক্ত পদার্থকে বিষমুক্ত করে শরীর থেকে বের করে দেয়। ফলে, লিভার রোগে আক্রান্ত হলে তা পুরো মানবশরীরে অত্যন্ত বিরুপ প্রভাব ফেলে।কতগুলো ভাইরাস লিভারে স্বল্পমেয়াদী এবং কতগুলো ভাইরাস দীর্ঘমেয়াদী প্রদাহ সৃষ্টি করে। এই ভাইরাসগুলোকে বলা হয় হেপাটাইটিস ভাইরাস এবং সৃষ্ট রোগকে বলে হেপাটাইটিস। মানব লিভার প্রধানত পাঁচটি ভাইরাস দিয়ে আক্রান্ত হয়। ইংরেজী বর্ণমালার প্রথম পাঁচটি অক্ষর দিয়ে এদের নাম রাখা হয়েছে যথাক্রমে হেপাটাইটিস এ,বি,সি,ডি এবং ই। এর মধ্যে হেপাটাইটিস এ ও ই লিভারে স্বল্পমেয়াদী প্রদাহ করে এবং হেপাটাইটিস বি, সি ও ডি দীর্ঘমেয়াদী প্রদাহ করে।বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ১৪ লক্ষ মানুষ হেপাটাইটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। হেপাটাইটিস বি দ্ব্বারা প্রতি বছর স্বল্পমেয়াদী প্রদাহে আক্রান্ত হয় প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষ এবং প্রায় ৩৫ কোটি মানুষ দীর্ঘমেয়াদী প্রদাহে আক্রান্ত থাকে। সে হিসেবে সারা বিশ্বে প্রতি ১২ জনে একজন হেপাটাইটিস বি অথবা সি দ্ব্বারা আক্রান্ত। প্রতি বছর দীর্ঘমেয়াদে হেপাটাইটিস সি দ্ব্বারা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১৭ কোটি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী মানুষের মৃত্যুর কারণের দিক দিয়ে হেপাটাইটিস বি আক্রান্ত সিরোসিসের অবস্থান দশম।উক্ত পরিসংখ্যানের আলোকে হেপাটাইটিস রোগের প্রাদূর্ভাব ও ভয়াবহতা বিবেচনা করে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থ্যা ২০১০ সাল থেকে প্রতি বছর ২৮ শে জুলাইকে বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস হিসেবে পালন করার ঘোষণা দিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাথে তাল মিলিয়ে ২৮ শে জুলাই বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস উপলক্ষ্যে হেপাটাইটিস সমপর্কে জনসচেতনতা তৈরীর লক্ষ্যে প্রতি বছর আমাদের দেশেও হেপাটলজি সোসাইটি বাংলাদেশসহ বিভিন্ন সংগঠন উক্ত দিবসটি পালন করে আসছে।

 

মানব দেহের উপর হেপাটাইটিস রোগের প্রতিক্রিয়া
হেপাটাইটিস ভাইরাসগুলোকে সংক্রমণের মাধ্যমের ওপর ভিত্তি করে দু’ভাগে ভাগ করা হয়: এক, পানি ও খাদ্যবাহিত ভাইরাস- হেপাটাইটিস ‘এ’ এবং ‘ই’ এবং দুই, রক্ত কিংবা দূষিত সিরিঞ্জ-এর মাধ্যমে বাহিত ভাইরাস- হেপাটাইটিস ‘বি’, ‘সি’ এবং ‘ডি’।হেপাটাইটিস ‘এ’ এবং ‘ই’ ভাইরাস দ্বয় ছড়ায় দূষিত পানি এবং খাবারের মাধ্যমে। ফলে, রাস্তার ধারের খোলা খাবার, আঁঁখের রস, শরবত ও দূষিত খাবার এ ভাইরাসে আক্রান্ত করার জন্য দায়ী। এছাড়া, যারা শহরে বাস করেন কিন্তু পানি না ফুটিয়ে পান করেন কিংবা যারা গ্রামে গঞ্জে টিউবয়েলের পানির পরিবর্তে ডোবা-নালা-পুকুর থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করেন তারাও হেপাটাইটিস ‘এ’ বা ‘ই’ তে আক্রান্ত হতে পারেন।

ভাইরাসদ্বয় পানি বা খাবারের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশের ১৫-৬০ দিন পর জণ্ডিস দেখা দেয়। আমরা জানি, ভাইরাস কোষের ভিতর প্রবেশ করে কোষের ভিতরের ডিএনএ ও বিভিন্ন এনজাইম ব্যবহার করে বংশবৃদ্ধি করে। হেপাটাইটিস ভাইরাস লিভারের কোষে আক্রমণ করে। লিভারের কোষ নষ্ট হলে বিলিরুবিন রক্তে প্রবেশ করে। ফলে, রক্তে বিলিরুবিন বেড়ে যায় এবং জণ্ডিস দেখা দেয়। এছাড়াও, লিভার আক্রান্ত হওয়ায় ক্ষুধামন্দা, বমি বমি ভাব, বমি, জ্বর, পেটের ডান দিকে পাজরের নিচে ব্যথা নানাবিধ সমস্যা দেখা দেয়। তবে, হেপাটাইটিস ‘এ’ এবং ‘ই’ ভাইরাস সবাইকে সমান মাত্রায় আক্রান্ত করে না। এ কারণে, রোগের লক্ষণের মাত্রায় ভিন্নতা দেখা যায়। ‘এ’ ভাইরাস সাধারণত শিশুদের বেশী আক্রমণ করে এবং প্রাপ্তবয়স্করা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হয় ‘ই’ ভাইরাসের শিকার। ভাইরাসদ্ব্বয় দূষিত পানির মাধ্যমে ছড়ায় বিধায় বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন সময় মহামারীর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বাংলাদেশে বন্যার সময় হেপাটাইটিসের মহামারীর জন্য দায়ী হেপাটাইটিস ‘ই’ ভাইরাস।

হেপাটাইটিস ‘এ’ এবং ‘ই’-কে বলা হয় সেল্ফ লিমিটিং ডিজিজ। অর্থাত্, আমাদের শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এদেরকে শরীর থেকে দূর করার জন্য যথেষ্ট এবং বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই দুই থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জণ্ডিস আপনাআপনি সেরে যায়। সাধারণত হেপাটইটিস ‘এ’ এবং ‘ই’ মারাত্মক কোন সমস্যা সৃষ্টি করে না। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে হেপাটিক ফেইলারের মত ভয়াবহ পরিণতি আনতে পারে। বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের হেপাটিক ফেইলার হওয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকে। যদি জণ্ডিসে আক্রান্ত কোন রোগী অস্থিরতা, অস্বাভাবিক আচরণ করে বা অজ্ঞান হয়ে যায়, তখন বুঝে নিতে হবে যে তা জরুরী অবস্থা এবং কোন বিলম্ব না করে বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকের স্মরণাপন্ন হতে হবে এবং হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। 

হেপাটাইটিস ‘বি’ এবং ‘সি’ ভাইরাস মূলত রক্তের মাধ্যমে ছড়ায়। তবে, বাচ্চার কোমল ত্বকের সংস্পর্শে মা থেকে বাচ্চাতে, লালার মাধ্যমে, একই সিরিঞ্জ বারবার ব্যবহারের মধ্য দিয়ে এবং ঝুঁকিপূর্ণ যৌনমিলনের মাধ্যমেও ভাইরাস দুটি ছড়ায়। এছাড়াও, আকুপাংচার, মুসলমানী, নাক-কান ফুঁড়ানো, নাপিতের ক্ষুর ইত্যাদি ভাগাভাগি করে ব্যবহার করার মাধ্যমে এরা ছড়াতে পারে। আক্রান্ত মায়ের শিশু সন্তান, আক্রান্ত পরিবারের অন্যান্য সদস্য, বহুবার রক্তগ্রহনকারী রোগী, মাদকাসক্ত ব্যক্তি, মানসিক অবসাদগ্রস্থ ব্যক্তি, স্বাস্থ্য-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান তথা হাসপাতালে কর্মরত ব্যক্তিবর্গ যেমন ডাক্তার, নার্স, ল্যাবরেটরীতে কর্মরত ব্যক্তিবর্গ, দন্তরোগের চিকিত্সকগণ এই ভাইরাসদ্ব্বয়ে আক্রান্ত হওয়ার জন্য অত্যধিক ঝুকিপূর্ণ।

হেপাটাইটিস ‘বি’ এবং ‘সি’ ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশের পর এক থেকে ছয় মাস সুপ্তাবস্থায় থাকে। অত:পর, লিভার আক্রমণের বিভিন্ন লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে। সাধারণত ‘এ’ ও ‘ই’ ভাইরাসের মত জণ্ডিস এই ভাইরাস দুটি দিয়ে হয় না। মূলত দুর্বলতা, শরীর ম্যাজম্যাজ করা, ক্ষুধামন্দা, বুকের নিচে পেটের ডানদিকে অস্বস্তি ইত্যাদি লক্ষণ প্রকাশ পায়। কোন কোন রোগীর ক্ষেত্রে জণ্ডিস, জ্বর ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। তবে, এই ভাইরাসদ্ব্বয় দীর্ঘদিন যাবত নিরবঘাতকের মত কাজ করে এবং এই সময়ে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে স্পষ্ট কোন লক্ষণ দেখা যায় না। কিন্তু, এ অবস্থায় অন্যান্য ব্যক্তির মধ্যে এই ভাইরাস ছড়াতে পারে।

‘বি’ ও ‘সি’ ভাইরাস যখন লিভারে দীর্ঘমেয়াদী প্রদাহ সৃষ্টি করে, তখন মানবদেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এই ভাইরাসগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে, তবে এই প্রতিরোধ হেপাটাইটিস ‘এ’ বা ‘ই’ ভাইরাসকে শরীর থেকে দূর করতে পারে কিন্তু হেপাটাইটিস ‘বি’ ও ‘সি’ (hepatitis c cure) -কে পুরোপুরি দূর করতে পারে না।  দীর্ঘদিন যাবত ‘বি’ অথবা ‘সি’ ভাইরাস ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার যে যুদ্ধ চলতে থাকে তার ফলে লিভারে ফাইব্রোজেনেসিস এবং নেক্রোসিস নামক বিশেষ প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং পরিণামে তা লিভাব সিরোসিসের দিকে ধাবিত হয়। কারও কারও ক্ষেত্রে সিরোসিস থেকে হেপাটিক ফেইলিউর ও লিভার ক্যান্সার নামক মারাত্মক দশায় উপনীত হতে পারে।

হেপাটাইটিস ‘বি’ ও ‘সি’ দীর্ঘ সময় ধরে ধীরে ধীরে আক্রমণ করে বিধায় আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে প্রাথমিক পর্যায়ে এর কোন প্রভাব পড়েনা এবং  উক্ত ব্যক্তি স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে। তবে, রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় লিভার সিরোসিস হয়ে যাওয়ার পর। কাউকে রক্ত দিতে গিয়ে বা অন্য কোন অসুস্থতার কারণে রক্ত পরীক্ষা করে শরীরে হেপাইটাইটিস ‘বি’ বা ‘সি’-এর উপস্থিতি আবিষ্কার করা হয়। এসকল ক্ষেত্রে ঠিক মত চিকিত্সা গ্রহণ করলে লিভারের দীর্ঘ মেয়াদী প্রদাহ থেকে লিভার সিরোসিসে রূপান্তরকে প্রতিহত করা সম্ভব। কিন্তু,বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশের মানুষের একটি বড় অংশ তাদের শরীরের এই ভয়ংকর ভাইরাসদ্বয়ের উপস্থিতি সম্পর্কে জানতে পারছে না এবং সঠিক চিকিত্সা গ্রহন করতে পারছে না।

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় হেপাটাইটিসের প্রভাব
হেপাইটাইটিস ভাইরাস জনিত লিভার রোগ প্রতিরোধ এবং প্রতিকার করা কতটা জরুরী তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। এছাড়া লিভার সেন্টারের অভিজ্ঞতায় এটাও প্রতীয়মান হয়েছে যে লিভার রোগীদের একটি বড় অংশ তখনই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে আসেন যখন তাদের রোগ অনেকদূর অগ্রসর হয়ে গিয়েছে। এর আগে তারা বিভিন্ন কবিরাজ,বৈদ্য,গ্রাম্যডাক্তারের সরণাপন্ন হয়ে ভুল চিকিত্সা নিতে থাকেন অথবা সাধারণ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করে প্রাথমিক চিকিত্সা নিয়েই বসে থাকেন। কিন্তু শেষ পর্যায়ে এসে উক্ত রোগীদের চিকিত্সা করা আরও কঠিন ও ব্যয়বহুল। অনেক পরিবারই এই ব্যয় বহন করতে সক্ষম হন না কিংবা অবহেলা করেন,যার ফলশ্রুতিতে উক্ত রোগীদের একটি অংশ মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন। সুতরাং,যথাসময়ে যথাস্থানে চিকিত্সা গ্রহণ করার ব্যাপারে সচেতন হওয়াও অনেক জরুরী। 

আমরা দেখেছি যে, দীর্ঘ মেয়াদী লিভার প্রদাহ ও সিরোসিসের জন্য দায়ী মূল ভাইরাস দুটি হলো হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাস। বাংলাদেশে নবাগত শিশু থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধ নারী-পুরুষ সবাই বি ও সি ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে আছে। এর পেছনে উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হলো: হেপাটাইটিস বি এবং সি ভাইরাস সমপর্কে সচেতনতার অভাব,সার্জারী, গাইনী ও ডেন্টিস্ট্রীর কাজে ব্যবহূত যন্ত্রপাতীগুলো ঠিকভাবে জীবানুমুক্ত না করা,উত্স যাচাই না করে রক্ত গ্রহণ,ইনজেকশন ঠিকমত ডিসপোস না করা এবং নাপিত কতৃক একই ব্লেড পুন:পুন: ব্যবহার। এছাড়া,এমন অনেক পরিবার পাওয়া যাচ্ছে যাদের একাধিক সদস্য হেপাটাইটিস ‘বি’-তে আক্রান্ত। মূলত অনিরাপদ যৌনমিলনের কারণে এবং স্বামী-স্ত্রীর একজন হেপাইটাইটিস ‘বি’-তে আক্রান্ত থাকলে অন্য একজন হেপাটাইটিস ‘বি’-এর টিকা না নেয়ার কারণে স্বামী-স্ত্রী পরস্পর হেপাটাইটিস বি-তে আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়া, জন্মের সময়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ সমপর্কে অজ্ঞতার কারণে আক্রান্ত মা থেকে শিশুতে হেপাটাইটিস বি ছড়িয়ে পড়ছে।

হেপাটাইটিস বি এবং সি আক্রান্ত ব্যক্তি শুধু যে ব্যক্তিগত ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় তা নয়। বরং,এর প্রভাব পড়ে উক্ত ব্যক্তির পরিবারে,সমাজে,এমনকি পুরো রাষ্ট্রে। যে ব্যক্তি রক্তে হেপাটাইটিস ‘বি’ বা ‘সি’ বহন করছেন তিনি পরিবারের অন্য একজন সদস্যের আক্রান্ত হওয়ার কারণ হতে পারেন। রক্তে হেপাটাইটিস ‘বি’ বহনকারী ব্যক্তি যোগ্যতা থাকা সত্যেও বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে মেডিকেলি আনফিট বিবেচিত হন। পরিবারের একজন কর্মক্ষম ব্যক্তির লিভার সিরোসিস হলে তিনি অসুস্থতার কারণে কোন পেশায় নিয়োজিত হতে পারেন না। বরং,সিরোসিস চিকিত্সার জন্য নিয়মিত অর্থ ব্যয় করতে হয়। ফলে, পরিবারের অর্থনীতির জন্য তিনি একটি বোঝা হয়ে দাড়ান। একটি সমাজে এরুপ বেশ কিছু লোক যদি অকর্মক্ষম হয়ে পড়ে থাকেন,তা সমাজের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য একটি বাঁধা হিসেবে কাজ করে। সমাজে তারা হেপাটাইটিসের উত্স হিসেবে কাজ করেন। এ ব্যক্তিদের পেছনে রাষ্ট্রের চিকিত্সা ব্যয়ও বেড়ে যায়। অথচ, একটু সচেতন হলে এবং সময়মত টিকা গ্রহণ করলে উপরোক্ত অনেক ব্যক্তিই দীর্ঘমেয়াদী লিভার প্রদাহ প্রতিরোধ করতে পারতেন। অনুরুপ, মানুষের মাঝে উক্ত রোগ সমপর্কে যথেষ্ট জ্ঞান থাকলে যথাযথ সময়ে রোগ নির্ণয় করা, চিকিত্সা শুরু করা এবং দীর্ঘমেয়াদী রোগে পরিণত হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়াও সম্ভব।

হেপটাইটিস রোগের  treatments for hepatitis চিকিত্সা বাংলাদেশেই হয়। এর জন্য অযথা বিদেশে ছোটাছুটি করা অবান্তর। আমরা দেখেছি যে, হেপাটাইটিস ‘এ’ এবং হেপটাইটিস ‘ই’ দ্ব্বারা সৃষ্ট হেপাটাইটিস রোগ অধিকাংশ ক্ষেত্রে দুই থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে সেড়ে যায়। যথাযথ বিশ্রাম নিলে এবং ডাক্তারের পরামর্শ মত কিছু ওষুধ সেবন করলে ও নিয়মমত খাবার গ্রহণ করলে এই রোগ আপনাআপনিই ভাল হয়। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি  করে চিকিত্সা করা লাগতে পারে। যেমন: রোগীর যদি এমন ক্ষুধামন্দা,বমি বমি ভাব ও বমির প্রবণতা থাকে যে রোগী মুখে কোন খাবার গ্রহণ করতে পারছে না। এছাড়া, গর্ভবতী মহিলা ‘ই’ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে ও মহামারী আকারে ভাইরাল হেপাটাইটিস দেখা দিলেও হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন হতে পারে।   

হেপাটাইটিস ‘বি’ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর কয়েকটি পরিণতি হতে পারে। সে লক্ষণহীন অবস্থায় হেপাটাইটিস ‘বি’ ভাইরাসের সারফেস এন্টিজেন বহন করতে পারে। এ অবস্থায় বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের অধীনে নিয়মিত ফলোআপ-এ থাকতে হয়, যেন যে কোন সময় ভাইরাস বংশবৃদ্ধি শুরু করলে চিকিত্সা করা যায়। যে সকল রোগী লক্ষণহীন অবস্থায় থাকে, কিন্তু ভাইরাস লিভারে একটিভ থাকে তথা বংশবৃদ্ধি করতে থাকে তাদের ক্ষেত্রে ইনজেকশন বা মুখে নেয়ার ওষুধ দিয়ে চিকিত্সা করা যায়, যা বাংলাদেশে সহজপ্রাপ্য। এছাড়া বাংলাদেশের লিভার বিশেষজ্ঞগণ ‘বি’ ভাইরাস থেকে সৃষ্ট সিরোসিস রোগের চিকিত্সাও সফলতার সাথে করে আসছেন। যারা দীর্ঘদিন ধরে হেপাটাইটিস ‘সি’ ভাইরাস বহন করছেন তাদের চিকিত্সাও বাংলাদেশে হচ্ছে এবং নতুন চিকিত্সায় ৯০ শতাংশ পর্যন্ত রোগীকে ভাল করা সম্ভব। এমনকি,‘বি’ ও ‘সি’ ভাইরাসজনিত লিভার ক্যান্সারের hepatitis c treatment cost ক্ষেত্রে লিভার ট্রান্সপ্ল্যানটেশন করার চেষ্টাও বাংলাদেশের লিভার বিশেষজ্ঞরা শুরু করেছেন।

হেপাটাইটিস রোগ থেকে মুক্তির উপায় Cures for hepatitis
উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমাদের কাছে যে বিষয়টি দিবালোকের মত স্পষ্ট তা হলো হেপাটাইটিস রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে আমাদের ব্যক্তিপর্যায় থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। ব্যক্তি ও সামাজিক পর্যায়ে এ রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সেমিনার, সিমেপাজিয়াম, আলোচনা সভার আয়োজন করতে হবে। দেশের মিডিয়ার ভুমিকা এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশী। সাংবাদিক বন্ধুগ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক আর্টিকেল ও অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গণমানুষের মাঝে হেপাটাইটিসের লক্ষণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধ সমপর্কে তথ্য পৌছে দিবেন। ভবিষ্যতে হেপাটাইটিস রোগের প্রতিরোধ ও প্রতিকার কল্পে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিতে হবে। বাংলাদেশে সরকার যেমন টিকাদান (hepatitis treatment)কর্মসূচীকে উল্লেখযোগ্য সফলতায় নিতে সক্ষম হয়েছে, তেমনি সরকারের উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতা পেলে লিভার বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকদের সহযোগীতায় হেপাটাইটিস রোগের ব্যপ্তিও কমিয়ে আনা সম্ভব।

পারিবারিক ও সামাজিকভাবে লজ্জায় পড়ার ভয়ে রক্তে হেপাটাইটিস বি বহনকারী অনেক ব্যক্তি তা প্রকাশ করেন না। ফলে, তারা যথাসময়ে চিকিত্সা গ্রহন করেন না। এছাড়া, বিভিন্ন ভুল ধারণার কারণে তারা তাদের কর্মস্থল থেকে ছিটকে পরেন। এ সকল ব্যক্তিদের মানসিক সাহস প্রদান করা এবং কর্মস্থলের প্রতিবন্ধকতা দূর করার মাধ্যমে  কর্মস্থলে ফিরিয়ে নেয়া গেলে একদিকে তারা চিকিত্সা গ্রহনে আত্মবিশ্বাসী হবেন, অন্যদিকে অর্থনৈতিকভাবেও তাদের পরিবার ও সমাজ উপকৃত হবে। যথাসময়ে চিকিত্সা গ্রহণ করার কারণে বি ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবও কমে আসবে।

উপসংহার
প্রতি বছর বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবসের একটি স্লোগান থাকে। এবারের স্লোগানটি হলো- “হেপাটাইটিস প্রতিরোধ: নির্ভর করছে আপনার উপর।” অর্থাত্ হেপাটাইটিস প্রতিরোধে ব্যক্তি পর্যায়ের সচেতনতা এবং উদ্যোগ অত্যন্ত জরুরী। সুতরাং, ব্যক্তি, সমাজিত ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দীর্ঘমেয়াদী রিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা হেপাটাইটিস রোগের প্রতিরোধকল্পে সম্মিলিত ভাবে এগিয়ে যাবো। একমাত্র এভাবেই জনসচেতনতা তৈরীর মধ্য দিয়ে গড়ে উঠবে হেপাটাইটিস মুক্ত বিশ্ব।

লেখক: অধ্যাপক মবিন খান পরিচালক
দি লিভার সেন্টার, ঢাকা, বাংলাদেশ
শিশুর শারীরিক সুস্থতা ও মানসিক প্রশান্তির জন্য তার মুখগহ্বরের সঠিক যত্ন নেওয়া জরুরি। জন্মের পর থেকে শিশুর এই যত্ন শুরু করা চাই। আর শিশুর বয়স বৃদ্ধির পাশাপাশি দাঁতের যত্ন পুরোদমে নিতে হবে।
শিশুর ডেন্টাল কেরিজ বা ক্ষয়রোগে দাঁতের অবস্থা, ব্যাকটেরিয়া জীবাণুর উপস্থিতি ও শর্করাযুক্ত খাবার গ্রহণ—এ তিনের ভূমিকা প্রধান। স্টেপটোককসাই মিউটেনম নামের মুখগহ্বরের ব্যাকটেরিয়া দাঁতের এনামেল নষ্ট করে প্রধানত ক্ষয়রোগের সুযোগ সৃষ্টি করে। পরে তার সঙ্গে যোগ হয় অন্য জীবাণু।
যখন মা-বাবা শিশুকে জুসভর্তি ফিডার বা বোতল মুখে পুরে দিয়ে ঘুমানোর কাজ সারেন—তা নিঃসন্দেহে দাঁত ক্ষয়ের পথ সুগম করে দেয়। দাঁতের ক্ষয়রোগ উৎপাদনে মুখের ভেতর বেশিক্ষণ ধরে পুরে রাখা শর্করাযুক্ত খাবার অনেকাংশে দায়ী। এ ক্ষেত্রে চুইংগাম বিভিন্ন কোমল পানীয়র শর্করার তুলনায় বেশি ক্ষতিকর।
সাধারণভাবে মোলার দাঁতের (ভেতরের দাঁত) প্রান্ত থেকে ক্ষয় বা পোকায় খাওয়া শুরু হয়। এই পর্বে তা থামানোর ব্যবস্থা না করা হলে দাঁতের আরও গভীরে ঢোকে। পালপাইটিস হয়, মাড়িতে ও দাঁতের চারপাশে পুঁজ, প্রদাহ হয়। আরও ছড়িয়ে তা পাশের দাঁত নষ্ট করে, চোয়ালের অস্থিও ছুঁতে পারে বা মুখ ও মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে যায়।
নষ্ট হওয়া দাঁত চিহ্নিত করতে হবে আগে। ব্যথা-বেদনার জন্য ওষুধ দিতে হবে। সংক্রমণ কতটুকু ছড়িয়েছে, তার ওপর নির্ভর করে খাওয়ানোর
কিংবা ইনজেকশনের সাহায্যে অ্যান্টিবায়োটিকস দেওয়া যেতে পারে।
প্রতিরোধটাই আসল। শিশুর প্রতি রাতে ও সকালে দুবার ব্রাশ করা, নিয়মিত মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য-পরিচর্যা মানানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আরও জরুরি শিশুকে খাওয়ানোর অভ্যাসে বোতল ফিডার ব্যবহার না করা।
ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী
 শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
- See more at: http://www.ebanglahealth.com/%e0%a6%b6%e0%a6%bf%e0%a6%b6%e0%a7%81%e0%a6%b0-%e0%a6%a6%e0%a6%be%e0%a6%81%e0%a6%a4%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b7%e0%a7%9f%e0%a6%b0%e0%a7%8b%e0%a6%97/#sthash.lYWLrfh6.dpuf
শিশুর শারীরিক সুস্থতা ও মানসিক প্রশান্তির জন্য তার মুখগহ্বরের সঠিক যত্ন নেওয়া জরুরি। জন্মের পর থেকে শিশুর এই যত্ন শুরু করা চাই। আর শিশুর বয়স বৃদ্ধির পাশাপাশি দাঁতের যত্ন পুরোদমে নিতে হবে।
শিশুর ডেন্টাল কেরিজ বা ক্ষয়রোগে দাঁতের অবস্থা, ব্যাকটেরিয়া জীবাণুর উপস্থিতি ও শর্করাযুক্ত খাবার গ্রহণ—এ তিনের ভূমিকা প্রধান। স্টেপটোককসাই মিউটেনম নামের মুখগহ্বরের ব্যাকটেরিয়া দাঁতের এনামেল নষ্ট করে প্রধানত ক্ষয়রোগের সুযোগ সৃষ্টি করে। পরে তার সঙ্গে যোগ হয় অন্য জীবাণু।
যখন মা-বাবা শিশুকে জুসভর্তি ফিডার বা বোতল মুখে পুরে দিয়ে ঘুমানোর কাজ সারেন—তা নিঃসন্দেহে দাঁত ক্ষয়ের পথ সুগম করে দেয়। দাঁতের ক্ষয়রোগ উৎপাদনে মুখের ভেতর বেশিক্ষণ ধরে পুরে রাখা শর্করাযুক্ত খাবার অনেকাংশে দায়ী। এ ক্ষেত্রে চুইংগাম বিভিন্ন কোমল পানীয়র শর্করার তুলনায় বেশি ক্ষতিকর।
সাধারণভাবে মোলার দাঁতের (ভেতরের দাঁত) প্রান্ত থেকে ক্ষয় বা পোকায় খাওয়া শুরু হয়। এই পর্বে তা থামানোর ব্যবস্থা না করা হলে দাঁতের আরও গভীরে ঢোকে। পালপাইটিস হয়, মাড়িতে ও দাঁতের চারপাশে পুঁজ, প্রদাহ হয়। আরও ছড়িয়ে তা পাশের দাঁত নষ্ট করে, চোয়ালের অস্থিও ছুঁতে পারে বা মুখ ও মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে যায়।
নষ্ট হওয়া দাঁত চিহ্নিত করতে হবে আগে। ব্যথা-বেদনার জন্য ওষুধ দিতে হবে। সংক্রমণ কতটুকু ছড়িয়েছে, তার ওপর নির্ভর করে খাওয়ানোর
কিংবা ইনজেকশনের সাহায্যে অ্যান্টিবায়োটিকস দেওয়া যেতে পারে।
প্রতিরোধটাই আসল। শিশুর প্রতি রাতে ও সকালে দুবার ব্রাশ করা, নিয়মিত মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য-পরিচর্যা মানানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আরও জরুরি শিশুকে খাওয়ানোর অভ্যাসে বোতল ফিডার ব্যবহার না করা।
ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী
 শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
- See more at: http://www.ebanglahealth.com/%e0%a6%b6%e0%a6%bf%e0%a6%b6%e0%a7%81%e0%a6%b0-%e0%a6%a6%e0%a6%be%e0%a6%81%e0%a6%a4%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b7%e0%a7%9f%e0%a6%b0%e0%a7%8b%e0%a6%97/#sthash.lYWLrfh6.dpuf
শিশুর শারীরিক সুস্থতা ও মানসিক প্রশান্তির জন্য তার মুখগহ্বরের সঠিক যত্ন নেওয়া জরুরি। জন্মের পর থেকে শিশুর এই যত্ন শুরু করা চাই। আর শিশুর বয়স বৃদ্ধির পাশাপাশি দাঁতের যত্ন পুরোদমে নিতে হবে।
শিশুর ডেন্টাল কেরিজ বা ক্ষয়রোগে দাঁতের অবস্থা, ব্যাকটেরিয়া জীবাণুর উপস্থিতি ও শর্করাযুক্ত খাবার গ্রহণ—এ তিনের ভূমিকা প্রধান। স্টেপটোককসাই মিউটেনম নামের মুখগহ্বরের ব্যাকটেরিয়া দাঁতের এনামেল নষ্ট করে প্রধানত ক্ষয়রোগের সুযোগ সৃষ্টি করে। পরে তার সঙ্গে যোগ হয় অন্য জীবাণু।
যখন মা-বাবা শিশুকে জুসভর্তি ফিডার বা বোতল মুখে পুরে দিয়ে ঘুমানোর কাজ সারেন—তা নিঃসন্দেহে দাঁত ক্ষয়ের পথ সুগম করে দেয়। দাঁতের ক্ষয়রোগ উৎপাদনে মুখের ভেতর বেশিক্ষণ ধরে পুরে রাখা শর্করাযুক্ত খাবার অনেকাংশে দায়ী। এ ক্ষেত্রে চুইংগাম বিভিন্ন কোমল পানীয়র শর্করার তুলনায় বেশি ক্ষতিকর।
সাধারণভাবে মোলার দাঁতের (ভেতরের দাঁত) প্রান্ত থেকে ক্ষয় বা পোকায় খাওয়া শুরু হয়। এই পর্বে তা থামানোর ব্যবস্থা না করা হলে দাঁতের আরও গভীরে ঢোকে। পালপাইটিস হয়, মাড়িতে ও দাঁতের চারপাশে পুঁজ, প্রদাহ হয়। আরও ছড়িয়ে তা পাশের দাঁত নষ্ট করে, চোয়ালের অস্থিও ছুঁতে পারে বা মুখ ও মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে যায়।
নষ্ট হওয়া দাঁত চিহ্নিত করতে হবে আগে। ব্যথা-বেদনার জন্য ওষুধ দিতে হবে। সংক্রমণ কতটুকু ছড়িয়েছে, তার ওপর নির্ভর করে খাওয়ানোর
কিংবা ইনজেকশনের সাহায্যে অ্যান্টিবায়োটিকস দেওয়া যেতে পারে।
প্রতিরোধটাই আসল। শিশুর প্রতি রাতে ও সকালে দুবার ব্রাশ করা, নিয়মিত মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য-পরিচর্যা মানানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আরও জরুরি শিশুকে খাওয়ানোর অভ্যাসে বোতল ফিডার ব্যবহার না করা।
ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী
 শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
- See more at: http://www.ebanglahealth.com/%e0%a6%b6%e0%a6%bf%e0%a6%b6%e0%a7%81%e0%a6%b0-%e0%a6%a6%e0%a6%be%e0%a6%81%e0%a6%a4%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b7%e0%a7%9f%e0%a6%b0%e0%a7%8b%e0%a6%97/#sthash.lYWLrfh6.dpuf
শিশুর শারীরিক সুস্থতা ও মানসিক প্রশান্তির জন্য তার মুখগহ্বরের সঠিক যত্ন নেওয়া জরুরি। জন্মের পর থেকে শিশুর এই যত্ন শুরু করা চাই। আর শিশুর বয়স বৃদ্ধির পাশাপাশি দাঁতের যত্ন পুরোদমে নিতে হবে।
শিশুর ডেন্টাল কেরিজ বা ক্ষয়রোগে দাঁতের অবস্থা, ব্যাকটেরিয়া জীবাণুর উপস্থিতি ও শর্করাযুক্ত খাবার গ্রহণ—এ তিনের ভূমিকা প্রধান। স্টেপটোককসাই মিউটেনম নামের মুখগহ্বরের ব্যাকটেরিয়া দাঁতের এনামেল নষ্ট করে প্রধানত ক্ষয়রোগের সুযোগ সৃষ্টি করে। পরে তার সঙ্গে যোগ হয় অন্য জীবাণু।
যখন মা-বাবা শিশুকে জুসভর্তি ফিডার বা বোতল মুখে পুরে দিয়ে ঘুমানোর কাজ সারেন—তা নিঃসন্দেহে দাঁত ক্ষয়ের পথ সুগম করে দেয়। দাঁতের ক্ষয়রোগ উৎপাদনে মুখের ভেতর বেশিক্ষণ ধরে পুরে রাখা শর্করাযুক্ত খাবার অনেকাংশে দায়ী। এ ক্ষেত্রে চুইংগাম বিভিন্ন কোমল পানীয়র শর্করার তুলনায় বেশি ক্ষতিকর।
সাধারণভাবে মোলার দাঁতের (ভেতরের দাঁত) প্রান্ত থেকে ক্ষয় বা পোকায় খাওয়া শুরু হয়। এই পর্বে তা থামানোর ব্যবস্থা না করা হলে দাঁতের আরও গভীরে ঢোকে। পালপাইটিস হয়, মাড়িতে ও দাঁতের চারপাশে পুঁজ, প্রদাহ হয়। আরও ছড়িয়ে তা পাশের দাঁত নষ্ট করে, চোয়ালের অস্থিও ছুঁতে পারে বা মুখ ও মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে যায়।
নষ্ট হওয়া দাঁত চিহ্নিত করতে হবে আগে। ব্যথা-বেদনার জন্য ওষুধ দিতে হবে। সংক্রমণ কতটুকু ছড়িয়েছে, তার ওপর নির্ভর করে খাওয়ানোর
কিংবা ইনজেকশনের সাহায্যে অ্যান্টিবায়োটিকস দেওয়া যেতে পারে।
প্রতিরোধটাই আসল। শিশুর প্রতি রাতে ও সকালে দুবার ব্রাশ করা, নিয়মিত মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য-পরিচর্যা মানানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আরও জরুরি শিশুকে খাওয়ানোর অভ্যাসে বোতল ফিডার ব্যবহার না করা।
ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী
 শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
- See more at: http://www.ebanglahealth.com/%e0%a6%b6%e0%a6%bf%e0%a6%b6%e0%a7%81%e0%a6%b0-%e0%a6%a6%e0%a6%be%e0%a6%81%e0%a6%a4%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b7%e0%a7%9f%e0%a6%b0%e0%a7%8b%e0%a6%97/#sthash.lYWLrfh6.dpuf

Wednesday, May 11, 2016

" ছেলেরা ঘুমানোর আগে যেভাবে Skin এর যত্ন নেবেন "

"ছেলেরা ঘুমানোর আগে যেভাবে Skin এর যত্ন নেবেন"

 ছেলেরা ঘুমানোর আগে যেভাবে Skin এর যত্ন নেবেন। আমাদের দৈনন্দিন ব্যস্ততম জীবনে পুরুষদের ত্বকের যত্ন নেয়া হয় না। দিনভর কাজ, ধুলাবালি, রাস্তার কালো ধোয়া, রোদের তাপ সব শেষে বাসায় ফিরে আয়নার নিজের চেহারা দেখে অবাক হওয়াটা শুধু বাকি থাকে। মুখে কালো ছোপ আর ধুলাবালিতে চেহারার উজ্জ্বলতা কোথায় যেনো হারিয়ে গেছে।প্রাকৃতিকভাবে ত্বককে উজ্জ্বল করতে শসা খুব উপকারী উপাদান হিসেবে কাজ করে। প্রতিদিন বাসায় ফিরে মুখ ধোয়ার আগে শসার টুকরো দিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট মুখ ঘষে ঘষে পরিষ্কার করে নিন। প্রতিদিন ব্যবহারে ত্বক অনেক পরিষ্কার হয়। এ ছাড়া শসার রস ত্বকে প্রাকিতিক মশ্চারাইজার হিসেবেও কাজ করে।

এলোভেরার জেলোতে প্রচুর পরিমাণে আন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা ফাটা ত্বক সারিয়ে তুলতে অনেক উপকারী। সপ্তাহে ১ থেকে ২ দিন এলোভেরা জেলো মুখে মেখে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে মুখ ধুয়ে নিন। এটি ত্বকের মৃত কোষগুলো বের করে ত্বককে আরো উজ্জ্বল করে তোলে।
স্বাভাবিক ও শুষ্ক ত্বক
এ ধরনের ত্বক পরিষ্কার করার জন্য ত্বক উপযোগী ক্লিনজিং জেল বা ফোম ব্যবহার করা উচিত। ত্বক নরম ও মসৃণ থাকবে। ক্লিনজার নিয়ে হালকাভাবে ত্বকে ম্যাসাজ করুন। তারপর ভেজা তুলা দিয়ে মুছে ফেলুন। ভেজা তুলা ব্যবহার করলে ত্বকের ময়েশ্চার বজায় থাকবে ভালোভাবে।
ক্লিনজিংয়ের (Cleanser) পর জরুরি টোনিং (Toning)। ভিজা তুলা দিয়ে স্কিন টোনার লাগান। টোনারের বদলে গোলাপ পানিও ব্যবহার করতে পারেন। টোনিংয়ের পর রিশিং ক্রিম বা পাইট ক্রিম দিয়ে ম্যাসাজ করুন। ত্বক যদি বেশি শুষ্ক প্রকৃতির হলে ক্রিম লাগানোর পর হালকা ময়েশ্চারাইজিং লোশন ( Moisturising lotion) লাগাতে পারেন, না হলে ময়েশ্চারাইজার লাগানোর দরকার নেই।
সেনসেটিভ ত্বক
ত্বকে ব্রণের সমস্যা থাকলে মেডিকেটেড সোপ বা ক্লিনজার ব্যবহার করা ভালো। ত্বকের অতিরিক্ত তেল সরিয়ে আপনার ত্বককে ফ্রেস রাখবে। এছাড়া ব্রণ কমাতে চন্দনবাটা সারারাত লাগিয়ে রাখতে পারেন। স্যালাইসিলিক অ্যাসিডসমৃদ্ধ ক্রিম লাগাতে পারেন। তবে এতে ত্বকে টানভাব দেখা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে পুরো মুখে অ্যালোভেরা জেল হালকা করে লাগাতে পারেন। ক্লে মাক্সও লাগাতে পারেন। খুব ঠাণ্ডা বা গরম পানি দিয়ে মুখ ধোয়া উচিত নয়। মুখ পরিষ্কার করার পর ভালো করে পানি দিয়ে মুখ ধোবেন। বিশেষ করে ত্বক তৈলাক্ত প্রকৃতির হলে মুখ ভালো করে পানি দিয়ে ধুয়ে নেবেন। ত্বক শুষ্ক ধরনের হলে অ্যালোভেরা, লেবুসমৃদ্ধ সাবান ব্যবহার করবেন না। এছাড়া ত্বকে ব্রণ থাকলে লেবু জাতীয় কিছু সরাসরি না লাগানোই ভালো।
তৈলাক্ত ও মিশ্র ত্বক
এ ধরনের ত্বকের জন্য ভালো ক্লিনজিং লোশন বা ক্লিনজিং মিল্ক (Cleansing Milk) মুখে ভালোভাবে লাগানোর পর ভিজা তুলা দিয়ে মুখ মুছে ফেলুন। সাবানবিহীন ক্লিনজার বা ফেসওয়াশ ব্যবহার করতে পারেন। সাবানের মতো ফেসওয়াশ হাতে নিয়ে মুখে লাগাবেন। তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। তারপর টোনার বা অ্যাস্ট্রিনজেন্ট  লাগান। তৈলাক্ত ত্বকে নারিশিং ক্রিম ব্যবহার না করাই ভালো। কারণ এতে ত্বক আরও তৈলাক্ত হয়ে যেতে পারে এবং রোমকূপ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। হালকা ময়েশ্চারাইজার লাগাতে পারেন। মিশ্র প্রকৃতির ত্বকের শুষ্ক অংশে নারিশিং ক্রিমও ব্যবহার করতে পারেন।

" মোবাইলে দরকারি চিকিৎসা সেবার অ্যাপ "

              " মোবাইলে দরকারি চিকিৎসা সেবার অ্যাপ "

 জরুরি মুহূর্তে চিকিৎসাসেবার প্রয়োজনে স্মার্টফোনের একটি অ্যাপ কাজে লাগতে পারে। ‘আরএক্স ৭১ হেলথ’ নামের এমনই একটি অ্যাপ্লিকেশন সম্প্রতি উন্মুক্ত করেছে আরএক্স ৭১ লিমিটেড। অ্যাপটি বিনা মূল্যে ডাউনলোড এবং ব্যবহার করা যাবে। সম্প্রতি গুগল ডেভেলপার গ্রুপ (জিডিজি) ঢাকার আয়োজনে রাজধানীর ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে (আইইউবি) মোবাইলপ্রযুক্তি নিয়ে ‘মোবিকন ২০১৬’ সম্মেলনে শীর্ষস্থান দখল করে অ্যাপটি।
আরএক্স ৭১ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন বলেন, দেশের মানুষকে স্বাস্থ্যসচেতন করতে, রোগ সম্পর্কে সাধারণ ধারণা দিতে এবং জরুরি মুহূর্তে কোন চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে, সে-বিষয়ক দরকারি তথ্য ‘আরএক্স ৭১ হেলথ’ (Rx 71 Health) সেবাটির মধ্যে রয়েছে। গত দুই বছরের গবেষণা করে এই সেবা চালু করাহয়েছে।সেবাটিকে আমরা বলছি স্বাস্থ্যসেবায় ৩৬০ ডিগ্রি সলিউশন। বাংলায় আর এক্স ৭১-এর ওয়েবসাইটের https://rx71.co ৫টি সেবা পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে।শারীরিক ও মানসিক লক্ষণের ভিত্তিতে নিজের রোগ নিজেই নির্ণয় করার সুবিধা নিয়ে তৈরি রোগ নির্ণয় সার্ভিস। এতে যে তথ্যভান্ডার ও অ্যালগোরিদমের ব্যবহার করা হয়েছে, তাতে সম্ভাব্য রোগ সম্বন্ধে বিস্তারিত জানা যাবে এবং কোন ডাক্তারের কাছে যেতে হবে, সে বিষয়ে পরামর্শও পাওয়া যাবে। 

  •  নিজাম উদ্দিন আরও বলেন, স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধিতে ৯৭৯টি রোগ ও লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত ডেটাবেইস নিয়ে তৈরি করা হয়েছে স্বাস্থ্যজ্ঞান মডিউল। প্রতিটি রোগের বর্ণনা, লক্ষণ, কারণ, সাধারণ জিজ্ঞাসা, হেলথ টিপস, অ্যানিমেটেড ভিডিওসহ আরও তথ্য রয়েছে এই বিভাগে।
    তিন শর বেশি দেশি খাদ্যের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত নিয়ে তৈরি হয়েছে খাদ্য ও পুষ্টি বিভাগটি এবং নিজের ডায়েট প্ল্যান নিজেই তৈরি করা যাবে এই সেবাটির মাধ্যমে। ডায়েট প্ল্যান সিস্টেমটি একটি ইনটেলিজেন্ট সিস্টেম।
    সাড়ে সাত হাজারের বেশি ডাক্তারের ছবি, ডিগ্রি এবং ভিজিটিং কার্ডের স্ক্যানড কপি নিয়ে তৈরি করা হয়েছে আমাদের ডাক্তার ডিরেক্টরি বিভাগ। এখান থেকে আপনার চিকিৎসার জন্য উপযুক্ত ডাক্তার খুঁজে নিতে পারেন খুব সহজে। ডাক্তারদের রেটিং করার মাধ্যমে খুব সহজেই সবচেয়ে ভালো ডাক্তার খুঁজে পেতে পারেন আমাদের এই বিভাগ থেকে। ৭০০টিরও বেশি ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে হসপিটাল ডিরেক্টরি বিভাগে।
    আরএক্স ৭১ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী নিজাম বলেন, অ্যাপটির মাধ্যমে শিগগিরই চিকিৎসকের অ্যাপয়েন্টমেন্ট বা সাক্ষাৎকারের সেবা চালু করা হবে। এ ছাড়া দেশের হাসপাতালগুলোকে অটোমেশনের জন্য হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম নিয়ে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। মানুষকে সহজে তথ্য পৌঁছে দিতে ব্যবহারবান্ধব ওয়েবসাইট, অ্যাপ ও হাসপাতাল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের মধ্যে সমন্বয় রাখার কাজটিও করছে -rx71

    অ্যাপসটির ডাউনলোড লিংক


স্বামীকে সহবাসের আগে যে ১০টি কাজ করতেই হবে

   "স্বামীকে সহবাসের আগে যে ১০টি কাজ করতেই হবে "

স্বামীকে সহবাসের আগে যে ১০টি কাজ করতেই হবে
১। পতির কর্তব্য হলো, পত্নীকে প্রিয়তমা জ্ঞানে বা সত্যিকারের ধর্মপত্নী জ্ঞানে নিজের তৃপ্তির সঙ্গে সঙ্গে তারও দৈহিক ও মানসিক তৃপ্তি বিধান করা। নিজের কামনা পরিতৃপ্ত করাই সম্ভোগের একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত নয়।
২। কোন প্রকার বল প্রয়োগ করা আদৌ বাঞ্ছনীয় নয়। একথা মনে রাখতে হবে।
৩। চুম্বন, আলিঙ্গন, নিপীড়ন ইত্যাদি নানাভাবে স্ত্রীর মনে পূর্ণ কামাব জাগিয়ে তারপর তার সঙ্গে সহবাসে রত হওয়া প্রতিটি পুরুষের কর্তব্য।
৪। নারী ধীরে ধীরে আত্মসমর্পণ না করা পর্যন্ত তার সঙ্গে কখনও সহবাসে লিপ্ত হওয়া উচিত নয়।
৫। নারী কখনও নিজের যৌন উত্তেজনা কে মুখে প্রকাশ করে না। তবে সেটা অনেকটা লক্ষণ দেখে বুঝে নিতে হয়।
৬। নারীর কর্তৃব্য সর্বদা পতির প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসার ভাব ফুটিয়ে তোলা।
৭। পতিকে ঘৃণা করা, তাকে নানা কু-কথা ইত্যাদি বলা কখনই উচিত নয়। সহবাসের অনিচ্ছা থাকলে তা তাকে বুঝিয়ে বলা উচিত। ঘৃণা বা বিরক্তিসূচক তিরস্কার করা কখনও উচিত নয়। এতে পতির মনে দুঃখ ও বিরক্তি জাগতে পারে।
৮। নারীর কর্তৃব্য স্বামীর চুম্বন, দংশন ও আলিঙ্গনের প্রতিউত্তর দেওয়া।
৯। নারীর পূর্ণ কামভাব জাগলে পতিকে কৌশলে তা বুঝিয়ে দেওয়া উচিত।
১০। নারীর উত্তেজনা ধীরে ধীরে আসে-আবার তা ধীরে ধীরে তৃপ্ত হয়। পুরুষের উত্তেজনা আসে অকস্মাৎ আবার তা অকস্মাৎ শেষ হয়। তাই নারীর পূর্ণ কামভাব না জাগিয়ে সঙ্গমে মিলিত হলে নারী পূর্ণ তৃপ্তি পেতে পারে না। এরকম করা রিধিবিরুদ্ধৃ। এতে নারী পূর্ণ তৃপ্তি পায় না- এর জন্যে সে পর-পুরুষ পর্যন্ত গমন করতে পারে। দাম্পত্য জীবনে অনেক বিপর্যয় এর জন্যে আসতে পারে।